নিউটাউনে তৈরি হবে ‘বিশ্ব অঙ্গন’, কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে রাজ্যের শিল্পায়নে বড় পদক্ষেপ, জানালেন মমতা

জাতীয়

শিল্পায়নের লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে গেল রাজ্য। জমি এবং সেখানে শিল্প গড়তে দেওয়া হল প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র। এর মধ্যে যে বিষয়টি অন্যতম উল্লেখযোগ্য সেটি হল ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্পের সঙ্গে নিউটাউন এলাকায় গড়ে তোলা হবে একটি আন্তর্জাতিক মানের তথ্য, প্রযুক্তি, বিনোদন এবং সংস্কৃতি পার্ক।

বুধবার রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকের পর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ‘হিডকো-র সঙ্গে পিপিপি মডেলে নিউটাউন এলাকায় ২৫ একর জমিতে একটি ইন্টারন্যাশনাল ইনফর্মেশন টেকনোলজি এন্টারটেইনমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল পার্ক তৈরি করা হবে। বাংলায় এর নাম, বিশ্ব অঙ্গন। সরকারের দিক থেকে এর জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই বুধবার করে দেওয়া হয়েছে। এখানে আন্তর্জাতিক মানের প্রচুর অনুষ্ঠান হবে।’

শিল্পায়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এর আগেও রাজ্যের তরফে একাধিক জায়গা চিহ্নিত করে সেখানে তৈরি করা হয়েছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, পুরুলিয়া, বর্ধমান, দুর্গাপুর-সহ আরও কয়েকটি জেলায় ১০টি ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্লট’-এ শিল্প গড়ে তুলতে বিভিন্ন সংস্থাকে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোট ২৫১৫ একর জমিতে বিনিয়োগ হবে ২৫,০০০ কোটিরও বেশি টাকা। এর ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৭০,০০০ কর্মসংস্থান হবে। এগুলি অধিকাংশই ‘স্কিল ইন্ডাস্ট্রি’ বলে জানিয়েছেন তিনি।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উন্নতির জন্যও নেওয়া হয়েছে পদক্ষেপ। এই গোষ্ঠী যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্য আরও বেশি বাজারজাত করতে পারে সেজন্য ২৩টি জেলায় ২৩টি শপিং মল তৈরি হবে। রাজ্য জমি দিলেও মল তৈরি করবে বেসরকারি সংস্থা। সেখানে ২টি তলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ থাকবে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দিঘাতেও জমি খোঁজ করা হচ্ছে বড় বাজার তৈরি করার জন্য।

স্কুল নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শিক্ষকদের সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের চাকরিও। এদিন রাজ্যের তরফে তাঁদের জন্য আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ২৫,০০০ এবং ২০,০০০ টাকার মাসিক আর্থিক অনুদানের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহেই প্রশাসনিক কাজে তিনদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে যাবেন।

পাকিস্তানের কবল থেকে বুধবার ছাড়া পেয়েছেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের পক্ষ থেকে তাঁর মুক্তির জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজি বিএসএফের ডিজির সঙ্গে এবিষয়ে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষ থামার পর গত সোমবার ডিজিএমও স্তরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত পরশুর বৈঠকে যাতে পূর্ণমের মুক্তির বিষয়টি তোলা হয় সেবিষয়ে তিনি অনুরোধ জানান।

এদিনের মন্ত্রীসভার বৈঠকে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দে যে সমস্ত ভারতীয় সেনারা শহীদ হয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফেও আগামী শনি ও রবিবার প্রতিটি জেলায় ব্লকে ব্লকে বিকেল তিনটে থেকে পাঁচটা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা ছাড়াও সেনাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *