ভারতের বন্দর দিয়ে আর এ দেশে ঢুকবে না বাংলাদেশি পোশাক, খাবারও! নির্দেশিকা জারি মোদী সরকারের

News

এ বার বাংলাদেশি কিছু পণ্য ভারতের বাজারে আর ঢুকতে পারবে না। শনিবার সেই তালিকা দিয়ে জানাল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের অধীনে থাকা বৈদেশিক বাণিজ্য দফতর (ডিজিএফটি) জানাল, বন্দর দিয়ে বাংলাদেশি রেডিমেড পোশাক, খাবার ভারতে আমদানি করা যাবে না।

ডিজিএফটি জানিয়েছে, বাংলাদেশি কিছু পণ্য যেমন রেডিমেড পোশাক, খাদ্যসামগ্রীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। ভারতীয় বন্দরগুলি দিয়ে আর এই জাতীয় পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে ভারত হয়ে নেপাল বা ভুটানের মতো দেশে ওই সব পণ্য যাওয়ার ব্যাপারে কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না।

ফল, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য, তুলা, সুতির পোশাক, প্লাস্টিক এবং পিভিসি দিয়ে তৈরি জিনিস, রঞ্জকের মতো পণ্য প্রতিবেশি দেশ থেকে অসম, মিজোরাম, মেঘালয় কিংবা ত্রিপুরার কোনও শুল্ককেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা এবং ফুলবাড়ি শুল্ককেন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে আসা মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেলের মতো পণ্যের ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।

গত মাসেই বাংলাদেশ তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশকে ‘ট্রান্সশিপমেন্ট’ সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত। অর্থাৎ, ভারতের শুল্ককেন্দ্র ব্যবহার করে তৃতীয় কোনও দেশে পণ্য রফতানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। সেই সময় ভারত সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়ার ফলে ভারতীয় রফতানিকারক সংস্থাগুলির সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণেই বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। তবে সেই বারও নেপাল এবং ভুটানের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছিল।

ভারতের এই ঘোষণার দিন কয়েক পরেই বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, ভারত থেকে স্থলপথে সুতো আমদানি বন্ধ করছে তারা। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা শুধু কার্যকর করা হয় স্থলবন্দরের ক্ষেত্রেই। সমুদ্রপথ বা অন্য কোনও মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে সুতো আমদানিতে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই জানায় সেই দেশের সরকার। এ বার প্রায় সেই একই পথে হাঁটল ভারতও।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে ঢাকায় ক্ষমতায় এসেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। শেখ হাসিনা জমানায় ‘ট্রানজ়িট রুট’ নিয়ে সমঝোতার ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অগ্রগতি হলেও তা থমকে গিয়েছে। সেই আবহেই ইউনূস বার বার উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে মন্তব্য করেন। দিন কয়েক আগেই তিনি দাবি করেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য, নেপাল, ভুটান এবং বাংলাদেশের আলাদা ভাবে কাজ করার বদলে এক সঙ্গে কাজ করলে বেশি লাভবান হবে। ইউনূসের এই মন্তব্য ভালভাবে নেয়নি নয়াদিল্লি। এই নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। সেই আবহে বাংলাদেশি পণ্য আমদানি নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। তবে ইউনূসের মন্তব্যের জেরেই এই পদক্ষেপ কিনা, তা স্পষ্ট করেনি নয়াদিল্লি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *