২৮ দিন বাংলাদেশের জেলে বন্দি থাকার পর মুক্তি, ভারতীয় কৃষক শোনালেন অপহরণের হাড়হিম অভিজ্ঞতা

News

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কৃষকদের নিয়ে চলমান উত্তেজনা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সম্প্রতি নতুন মাত্রা পেয়েছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার শীতলকুচি উপজেলার বাসিন্দা উকিল বর্মনকে বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী বাহিনী অপহরণ করে, যা দুই দেশের সীমান্তবর্তী কৃষকদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে।


অপহরণের ঘটনা ও মুক্তির প্রক্রিয়া

২০২৫ সালের ১৬ এপ্রিল, উকিল বর্মন তার চার বিঘা জমিতে চাষ করতে গিয়ে বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BGB) দ্বারা অপহৃত হন। তিনি বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার একটি কারাগারে আটক ছিলেন। ২৮ দিন পর, ১৪ মে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) ও BGB-এর মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে উকিল বর্মনকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির পর, তিনি জানিয়ে দেন যে, ভবিষ্যতে সীমান্তের ওপারে চাষ করতে যাবেন না এবং তার জমি বিক্রি করে দেবেন। তার ছেলে, পরিতোষ বর্মন, সরকারের কাছে জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন ।

সীমান্তবর্তী কৃষকদের চ্যালেঞ্জ

উকিল বর্মনের ঘটনা একমাত্র নয়; এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার চর কাকমারি এলাকায় দুই ভারতীয় কৃষককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল। তারা বিএসএফ-এর কাছে নথি জমা দিয়ে চাষ করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা তাদের অপহরণ করে । এছাড়া, উত্তর দিনাজপুর জেলার অনন্তপুর গ্রামে দুই যুবককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, যারা সীমান্তের ওপারে চাষ করতে গিয়ে অপহৃত হন ।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
উকিল বর্মনের মুক্তির পর, পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বাসুনিয়া এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার উভয়েই ভারতীয় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন। তারা সীমান্তবর্তী কৃষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ।

উপসংহার
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কৃষকদের জন্য এই ঘটনা একটি সতর্কবার্তা। সীমান্তের ওপারে চাষ করতে গিয়ে অপহরণের মতো ঘটনা তাদের জীবিকার প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, দুই দেশের সরকারের উচিত সীমান্তবর্তী কৃষকদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কৃষকদের জন্য একটি সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত পরিবেশ গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *